শহরের ছোট একটা হোটেলে ৪ জন বন্ধু নিয়মিত আড্ডা দিতো এবং গল্প করতো। এরই ফাকে হোটেলের মালিক যে কিনা অনেক গরীব তাদের সবার সাথে সক্ষতা গড়ে তোলে। তারা একে অপরের সাথে আনন্দ করে, আলাপ করে এবং আরও অনেক কিছু।
একদিন ওরা সবাই বিজনেস করবে বলে প্লান করছিল। তারা অনেক আলোচনার পর একটা ব্যবসার প্লান করলো। কিন্তু সমস্যা দাড়ালো টাকা নিয়ে। বিজনেস করার জন্য টাকা কোথায় পাবে। এক বন্ধু বলল, ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা দিধাদন্দে পড়ে গেলো যে ব্যাংক আদৌও লোন দিবে কি না। দিলে পারে ইন্টারেস্ট, কাগজ পত্র ইত্যাদির ঝমেলা।
এইসব আলোচনা দোকানের মালিক গরীব লোকটা শুনছিল। সে তাদের কাছে এসে বলল, তোমরা যে টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিবা সেটা যদি আমি দেই তাহলে সমস্যা আছে?
ছেলেগুলো আশ্চর্য হলো, জিজ্ঞেস করলো যে তুমি এতো টাকা কোথায় পেলে?
লোকটা বলল, আমি আমার ছেলে মেয়ের জন্য জমিয়েছি। এই টাকায় তারা যেন একটু শুখে থাকতে পারে। তোমরা যদি এই টাকা নাও তাহলে আমাকে যে লাভ দিবা তাতে আমার ছেলে মেয়ে আরও একটু বেশি সুখে থাকবে।
ছেলেগুলো আশ্চর্য হলো কিন্তু তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলো না। তারা বলল, ঠিক আছে আমরা তোমার থেকেই টাকা নিবো এবং তোমার টাকায় ব্যবসা শুরু করবো।
গরীব লোকটা তার জমানো ৫ লাখ টাকা তাদের হাতে তুলে দিলো।
বছর খানিক পর ছেলেগুলো তার দোকানে আসলো এবং জিজ্ঞেস করলো, তোমার মোট কত টাকা হয়েছে পাওনা?
লোকটা উত্তর দিলো, লোনের ৫ লাখ আর তোমাদের চা নাস্তা বাবদ ৩৮০ টাকা।
ছেলেদের মধ্যে একজন বলল, তাহলে ৫ লাখ ৩৮০ টাকা তাই না?
লোকটা হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়ালো।
তারা একটা চেক ভাজ করে লোকটাকে দিয়ে বলল, এই নাও তোমার সব টাকা
গরিব লোকটা চেক না দেখে শার্টের পকেটে রেখে দিলো হাসি মুখে।
একজন ছেলে বলল, তুমি চেক দেখলা না যে কত টাকা আছে?
লোকটা বলল, তোমরা তো আমাকে কম দিবা না। এই বিশ্বাস আমার আছে। তোমরা যা ভালো মনে করেছো তাই আমাকে দিয়েছো। আমি এতেই খুশি।
ছেলেটা বলল, তাও একবার দেখে নাও।
গরীব লোকটার মুখ শুকিয়ে গিয়েছে তখন। ভয়ে ভয়ে চেকটা পকেট থেকে বের করে দেখে তার কান্না চলে আসলো। বলল, এতো টাকা আমাকে দিলে?
ছেলেগুলো হাসিমুখে বলল, এখন তোমার ছেলে মেয়ের জন্য আরও একটু বেশি ভালো রাখার ইচ্ছা করো।
No comments:
Post a Comment